
ফিলিস্তিনের গাজায় চলমান যুদ্ধ ও মানবিক বিপর্যয় নিয়ে মুসলিম বিশ্বের একাধিক নেতার সঙ্গে বৈঠক করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
মুসলিম বিশ্বের বিভিন্ন দেশ পাকিস্তান,জর্ডান,তুরস্কের নেতারা বৈঠকে উপস্থিত থাকলেও বিশ্বের অন্যতম মুসলিম অধ্যুষিত দেশ বাংলাদেশের সরকার প্রধান ড. ইউনূস এই বৈঠকে আমন্ত্রণ পায়নি। কয়েক মাস আগেই একটি প্রতিষ্ঠান ড. ইউনূসকে বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালী মুসলিম নেতার তালিকায় রাখলেও ট্রাম্পের বৈঠকে জায়গা হয়নি তার। প্রচলিত রয়েছে প্রফেসর ইউনূস বিভিন্ন সংস্থাকে আর্থিক সহায়তার মাধ্যমে নানা ধরণের পুরষ্কার ও অর্জন নিজের নামে করে নেয়। ধারণা করা হচ্ছে সেই কৌশলেই প্রভাবশালী মুসলিম নেতার তালিকায় জায়গা করে নিয়েছিলেন তিনি।
বৈঠক শেষে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান বলেছেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও বেশ কয়েকটি আরব ও মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশের নেতাদের মধ্যে গাজার পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠক ছিল ‘খুবই ফলপ্রসূ’।
নিউইয়র্কে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট বলেন, একটি যৌথ ঘোষণাপত্র প্রকাশ করা হবে। বৈঠকের ফলাফলে সন্তোষ প্রকাশ করলেও বিস্তারিত কিছু জানাননি তিনি।
ন্যাটো সদস্য তুরস্ক গাজায় ইসরাইলের হামলার কড়া সমালোচক এবং এটিকে গণহত্যা আখ্যা দিয়েছে আঙ্কারা। দেশটি ইসরাইলের সঙ্গে সবধরনের বাণিজ্য বাতিল করেছে। একইসঙ্গে গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি কার্যকর করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
এর আগে বৈঠকের শুরুতে ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, তিনি গাজার যুদ্ধ বন্ধ করবেন। বৈঠকটিকে একাধিকবার ‘সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক’ বলে উল্লেখ করেন ট্রাম্প। নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার, মিশর, জর্ডান, তুরস্ক, ইন্দোনেশিয়া ও পাকিস্তানের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা গাজার যুদ্ধ বন্ধ করতে চাই। আমরা এটিকে শেষ করব। হয়তো এখনই শেষ করতে পারব।’ তিনি আরও বলেন, ‘এটা আমার জন্য গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক, কারণ আমরা এমন কিছু শেষ করতে যাচ্ছি যা আপনারা হয়তো কখনো শুরুই করেননি।’ এসময় ট্রাম্প ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট প্রাবোও সুবিয়ান্তোর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে দেয়া ভাষণের প্রশংসা করেন। ওই ভাষণে সুবিয়ান্তো বলেন, টেকসই শান্তির জন্য ইসরাইলের নিরাপত্তা নিশ্চয়তা দেয়াও জরুরি।
এদিন জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশনে দেয়া ভাষণে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘আমাদের অবিলম্বে গাজায় যুদ্ধ বন্ধ করতে হবে। আমাদের এটি থামাতেই হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের এটা শেষ করতে হবে। আমাদের আলোচনা করতে হবে। আমাদের জিম্মিদের ফিরিয়ে আনতে হবে। আমরা ২০ জনকে ফিরিয়ে আনতে চাই। আমাদের এখনই তাদের ফিরিয়ে আনতে হবে। আমরা ৩৮ জন মৃতদেহও ফেরত চাই।’
ট্রাম্প অভিযোগ করেন, ‘হামাস বারবার যৌক্তিক শান্তি প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে।’ তিনি আগেও এমন অভিযোগ করেছেন। তবে ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠীটি নাকচ করে দিয়েছে। সেই সঙ্গে যুদ্ধবিরতি চুক্তি আটকে দেয়ার জন্য ইসরাইলকে দায়ী করেছে গোষ্ঠীটি। পশ্চিমা দেশগুলোর ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি নিয়ে কথা বলতে গিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট দাবি করেন, ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি হামাসের জন্য ‘পুরস্কার’।