Home / রাজনীতি / প্রয়োজন নেই তাও পাল্টা শুল্ক কমাতে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ২৫টি বোয়িং বিমান কিনবে বাংলাদেশ

প্রয়োজন নেই তাও পাল্টা শুল্ক কমাতে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ২৫টি বোয়িং বিমান কিনবে বাংলাদেশ

পাল্টা শুল্ক নিয়ে দর-কষাকষির অংশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের উড়োজাহাজ কোম্পানি বোয়িংয়ের কাছ থেকে ২৫টি বিমান কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ। এর মধ্যে কিছু বিমান আগামী এক-দুই বছরের মধ্যে পাওয়া যাবে। আজ রোববার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানিয়েছেন বাণিজ্যসচিব মাহবুবুর রহমান। তবে বিমান বাংলাদেশের বর্তমানে ২৫টি বিমানের কোনো চাহিদাই নেই। তাছাড়া এই বোয়িমগ কোম্পানির বিমান পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায় দূর্ঘটনার স্বীকার হচ্ছে,তাই এর চাহিদা সারাবিশ্বে কমে আসছে।

বিমান বাংলাদেশের প্রয়োজন নেই তাও কেনা হচ্ছে ২৫টি বোয়িং কোম্পানির বিমান: বিমান বাংলাদেশের বর্তমানে অনেক ফ্লাইট খালি থাকে। বোয়িং এর বড় বিমান দিয়ে দূরবর্তী স্থানের ফ্লাইট ছাড়া স্বল্প দূরত্বের ফ্লাইট পরিচালনা করলে অতিরিক্ত ক্ষতির সম্মুখীন হবে। দূরবর্তী স্থানের বেশিরভায়াগ ফ্লাইট খালিই থাকে বাংলাদেশ বিমানের। তাই বর্তমানে ২৫টি বোয়িং বিমানের কোনো প্রয়োজনই নেই।

Air India সহ বিভিন্ন দূর্ঘটনা হওয়ায় বোয়িং এর চাহিদা কমে গেছে সারাবিশ্ব,বাংলাদেশকে কিনতে বাধ্য করা হচ্ছে: এই বোয়িং কোম্পানির বিমান সম্প্রতি বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে দূর্ঘটনার স্বীকার হচ্ছে।সর্বশেষ ভারতে বোয়িং বিমানের ত্রুটির কারণে শতাধিক মানুষের প্রাণ চলে যায়। তারপরেও আমেরিকা তাদের কূটনীতির মাধ্যমে সারাবিশ্বে এই বিমান বিক্রি করেই যাচ্ছে। এরই বলি হচ্ছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ সরকারকে শুল্কের ফাঁদে ফেলে এই বোয়িং বিমান কিনতে বাধ্য করছে আমেরিকা।

এর চেয়ে কম মূল্যে ভালো কোয়ালিটির এয়ারবাস বিমান কিনতে চেয়েছিলেন শেখ হাসিনা: যে দামে বোয়িং বিমান কিনতে হবে বাংলাদেশকে তার চেয়ে কম মূল্যে ফ্রান্সের এয়ারবাস কোম্পানি থেকে বিমান কেনার চুক্তি করেছিলেন শেখ হাসিনা। আমেরিকার কোম্পানিকে বাদ দিয়ে দেশের স্বার্থে এয়ারবাস কোম্পানির বিমান কেনাও শেখ হাসিনাকে আমেরিকার চক্ষ্যুশূলে পরিণত করে। এর প্রভাব পড়ে আওয়ামীলীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের উপর।

মাহবুবুর রহমান আরও জানান, পাল্টা শুল্ক নিয়ে নতুন করে আলোচনার জন্য বাংলাদেশের একটি প্রতিনিধিদল আগামীকাল যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশে রওনা দেবে। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পরশু বৈঠক হবে। তিনি জানান, বিমান কেনা ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্র থেকে গম আমদানির একটি চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে।

সাংবাদিকদের বাণিজ্যসচিব বলেন, ‘শুল্ক চুক্তির খসড়া পাওয়ার পর কয়েক দফায় আমরা কাজ করেছি। ওয়াশিংটনে দুই দফা সরাসরি এবং অনলাইনে আলোচনা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও অংশীজনদের সঙ্গে বৈঠকের পর ২৩ জুলাই আমরা আমাদের চূড়ান্ত অবস্থান যুক্তরাষ্ট্রকে জানিয়েছি। এরপর তাদের কাছে নতুন করে সময় চেয়েছি।’

মাহবুবুর রহমান জানান, যুক্তরাষ্ট্রের কাছে সময় চাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে তাদের বাণিজ্য প্রতিনিধি (ইউএসটিআর) অফিস ২৯ ও ৩০ জুলাই সরাসরি বৈঠকের জন্য সময় দিয়েছে। ওই বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বাণিজ্য উপদেষ্টা, নিরাপত্তা উপদেষ্টা, বাণিজ্যসচিব উপস্থিত থাকবেন।

বাণিজ্যসচিব বলেন, ‘৩১ জুলাই সেখানে আরেকটি সভা হতে পারে। বাংলাদেশের প্রতিনিধিদল আগামীকাল সন্ধ্যায় রওনা দেবে। যেহেতু তাদের সঙ্গে আলোচনা চলছে, ফলে আগামী ১ আগস্টের যে সময়সীমা আছে, তার মধ্যেই হয়তো শুল্কের বিষয়ে ফলাফল ঘোষিত হয়ে যাবে বলে আমাদের ধারণা।’বোয়িং বিমান কেনার বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘বোয়িংয়ের ব্যবসা যুক্তরাষ্ট্র সরকারের নয়, এটি বোয়িং কোম্পানি করে। বাংলাদেশ মোট ২৫টি বোয়িংয়ের ক্রয়াদেশ দিয়েছে। অন্য দেশও এমন ক্রয়াদেশ দিয়েছে। যেমন ভারত ও ভিয়েতনাম ১০০টি করে এবং ইন্দোনেশিয়া ৫০টি বোয়িং বিমান অর্ডার দিয়েছে।’

মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘এখন বোয়িং কোম্পানি তাদের সক্ষমতা অনুযায়ী সরবরাহ করবে। অর্ডারের বোয়িং পেতে অনেক সময় লাগবে। যারা আগে অর্ডার দিয়েছে, তাদের আগে দেবে কিংবা প্রতিষ্ঠানটি তাদের ব্যবসার ধরন অনুযায়ী বিমান সরবরাহ করবে। বাংলাদেশের অতিদ্রুত কিছু বোয়িং দরকার। আগামী দু-এক বছরের মধ্যে হয়তো কয়েকটি বিমান পাওয়া যাবে।’বাংলাদেশ বিমানের বহর বাড়াতে হবে উল্লেখ করে বাণিজ্যসচিব আরও বলেন, ‘এই পরিকল্পনা সরকারের বেশ আগে থেকেই ছিল। আগে ১৪টি বোয়িংয়ের অর্ডার ছিল। পাল্টা শুল্ক ইস্যুতে সেই সংখ্যা বাড়িয়ে ২৫ করা হয়েছে।’

Tagged:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *