
২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর থেকে বাংলাদেশ পুলিশে একের পর এক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হলেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই শূন্যপদের সুনির্দিষ্ট সংখ্যা উল্লেখ করা হয়নি। সোমবার (১৮ আগস্ট) বিকেলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত কোর কমিটির সভা শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান।নির্বাচন নিয়ে কী আলোচনা হয়েছে- এমন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, নির্বাচন নিয়ে আপনারা সব সময় বলেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীতে কোনো নিয়োগ হয়নি। এজন্য আজকে আমি আপনাদের জানাচ্ছি নির্বাচনের আগেই পুলিশ বাহিনীতে ১৫ হাজার ৮৫১ জনকে নতুন নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশে (বিজিবি) ৪ হাজার ৪৬৯ জন ও আনসার ৫ হাজার ৫৫১ জন নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।এ ছাড়া নির্বাচনের সঙ্গে জড়িত না তারপরও কারায় ১ হাজার ৫৫৮ জনকে ও ফায়ার সার্ভিসে ২০৮ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে পদের সংখ্যা উল্লেখ না করে এতো সংখ্যক নিয়োগ দেওয়ায় সাধারণ চাকরিপ্রত্যাশীরা চরম হতাশা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তাদের অভিযোগ, “বিজ্ঞপ্তিতে পদসংখ্যা উল্লেখ না করেই অন্তর্বর্তী সরকার নিজেদের ইচ্ছেমতো প্রার্থীকে নিয়োগ দিয়ে যাচ্ছে, যা সাধারণ চাকরিপ্রার্থীদের জন্য মারাত্মক হুমকি।”
পুলিশের সরকারি ওয়েবসাইট ও অন্যান্য সূত্র যাচাই করে দেখা গেছে—১১ আগস্ট ২০২৪ : ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ। পদসংখ্যা উল্লেখ নেই।সেপ্টেম্বর ২০২৪ : জেলাভিত্তিক কনস্টেবল নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি। সংখ্যা প্রকাশ করা হয়নি।৫ অক্টোবর ২০২৪ : ক্যাডেট সাব-ইন্সপেক্টর (এসআই, নিরস্ত্র) নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি। কোনো শূন্যপদ সংখ্যা নেই।ফেব্রুয়ারি ২০২৫ : কনস্টেবল নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে জেলা ভিত্তিক তালিকা প্রকাশিত হলেও কেবল ঢাকা জেলায় ১৬৭ পদ উল্লেখ আছে, অন্য জেলার পূর্ণাঙ্গ সংখ্যা স্পষ্ট করা হয়নি।জুন ২০২৫ : আরেকটি কনস্টেবল নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়, কিন্তু তাতেও শূন্যপদ সংখ্যা নির্দিষ্ট করা হয়নি।
সব মিলিয়ে, ৫ আগস্ট ২০২৪-এর পর থেকে অন্তত ৫টি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে—যার মধ্যে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই শূন্যপদের সুনির্দিষ্ট সংখ্যা প্রকাশ পায়নি।
চাকরিপ্রত্যাশীদের ভাষ্য, স্বচ্ছ নিয়োগ প্রক্রিয়ার জন্য শূন্যপদের সংখ্যা প্রকাশ করা অত্যন্ত জরুরি। পদসংখ্যা গোপন রাখলে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় স্বজনপ্রীতি বা রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তারের সুযোগ তৈরি হয়। এতে মেধাবী ও যোগ্য প্রার্থীরা বঞ্চিত হওয়ার ঝুঁকিতে পড়েন।
একজন প্রার্থী বলেন, “বছরের পর বছর প্রস্তুতি নিচ্ছি। কিন্তু কতজনকে নিয়োগ দেওয়া হবে তা না জেনে পরীক্ষায় অংশ নেওয়া মানসিকভাবে ভীষণ হতাশার। এতে বোঝাই যাচ্ছে, সরকার নিজেদের ইচ্ছেমতো প্রার্থী নিয়োগ দিতে চাইছে।”