
২০২৪ সালের ০৫ই আগষ্টের পরে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়। এই সরকারে মোট তিনজন ছাত্র উপদেষ্টা হন। যাদের মধ্যে থেকে নাহিদ ইসলাম উপদেষ্টা পদ থেকে পদত্যাগ করে নতুন রাজনৈতিক দল ‘এনসিপি’ গঠন করে। বাকি দুই ছাত্র উপদেষ্টা পদে বহাল থাকলেও তাদেরও এনসিপির সাথে যুক্ত থাকাটা রাজনৈতিক অঙ্গণে বর্তমানে ‘ওপেন সিক্রেট’। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই ছাত্র উপদেষ্টাদের পিও,পিএস,এপিএস এবং এনসিপি নেতারা বিভিন্ন সময়ে বিশাল অঙ্কের দূর্নীতিতে জড়িয়ে পড়ে। এসকল দূর্নীতির শুধুমাত্র ৪জনের নামেই প্রায় ১০০০কোটি টাকার দূর্নীতির অভিযোগ উঠে।
২০২৫ সালের এনসিটিবির পাঠ্যবই ছাপার কাগজ থেকে ৪০০ কোটি টাকার বেশি কমিশন বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছিল এনসিটিবির কয়েকজন কর্মকর্তাসহ এনসিপি নেতা গাজি সালাউদ্দিন আহমেদ তানভীরের বিরুদ্ধে। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে ডিসি নিয়োগে তদবির বাণিজ্যে কোটি টাকা দূর্নীতির অভিযোগ উঠে।
এর আগে স্বাস্থ্য উপদেষ্টার পিও মাহমুদুলের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার, তদবির বাণিজ্য, চাঁদাবাজি, টেন্ডার বাণিজ্যসহ নানাবিধ দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। এসব অভিযোগে সে নামে-বেনামে ১৫০কোটি টাকার উপর সম্পদ অর্জন করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের সাবেক এপিএস মোয়াজ্জেম হোসেনের বিরুদ্ধে ৩৫০কোটি টাকা দূর্নীতির অভিযোগ উঠে।মোয়াজ্জেম হোসেনের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার, তদবির বাণিজ্য, চাঁদাবাজি, টেন্ডার বাণিজ্যসহ নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে শত শত কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে অনুসন্ধান চলছে।
সম্প্রতি প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যবের পিএ, যে কিনা পূর্বে উপদেষ্টা নাহিদের পিএ ছিলো সেই আতিক মোর্শেদের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। মোবাইল ব্যাংকিং নগদের ১৫০ কোটি টাকা বেহাতের অভিযোগ তার বিরুদ্ধে। এ ছাড়া নগদের গুরুত্বপূর্ণ পদে স্ত্রীসহ আত্মীয়দের চাকরি দেওয়ার অভিযোগও তার বিরুদ্ধে।নাহিদ ইসলামের পরামর্শেই আতিক মোর্শেদ এসব কাজে জড়িত কি না- এমন প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে।
শুধুমাত্র এই চারজনের বিরুদ্ধেই ১০০০কোটি টাকার উপরে দূর্নীতির অভিযোগ উঠেছে গত ৯মাসে। তাদের বিরুদ্ধে উঠা সকল অভিযোগের তদন্ত করছে দুদক। এরই মধ্যে বেশ কিছু অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় তাদের বিদেশ যাত্রায় নিষেধাজ্ঞা এবং এন আইডি ব্লক করা হয়েছে। যাদের বিরুদ্ধে এধরণের অভিযোগ উঠে এসেছে তারা সবাই জুলাই আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছিলো এবং বর্তমানে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে এনসিপির সাথে জড়িত। সদ্য তৈরি হওয়া দল এনসিপির নেতা-কর্মী ও তাদের সংশ্লিষ্টদের এই বিপুল পরিমাণ দূর্নীতি, জনগণের ছাত্রদের নিয়ে গড়া নতুন দলের প্রতি যে আকাঙ্খা দেখা দিয়েছিল তা ফিকে হয়ে এসেছে।