Home / শিক্ষা / জুম’আর পর থেকে জগন্নাথের শিক্ষার্থীদের গণ-অনশন শুরু

জুম’আর পর থেকে জগন্নাথের শিক্ষার্থীদের গণ-অনশন শুরু

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা তিন দফা দাবিতে অনড় অবস্থানে রয়েছেন। টানা দ্বিতীয় দিন বৃহস্পতিবারও তারা রাজধানীর কাকরাইল মোড়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন। রাত গভীর হলেও আন্দোলন থামেনি। রাত সাড়ে ১২টা পর্যন্ত সরকারের পক্ষ থেকে কোনো ঘোষণা আসেনি।

বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মো. রইছ উদ্দীন নতুন কর্মসূচির ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, আজ শুক্রবার সকাল ১০টায় কাকরাইল মোড়ে বর্তমান ও প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের সমাবেশ হবে। জুমার নামাজের পর থেকে গণ–অনশন শুরু করবেন তারা।আন্দোলনের মূল তিন দাবি হলো—

১. ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীর জন্য আবাসন বৃত্তি চালু করা।বিজ্ঞাপন

২. প্রস্তাবিত বাজেট কাটছাঁট না করে অনুমোদন দেওয়া।

৩. দ্বিতীয় ক্যাম্পাস প্রকল্প দ্রুত একনেক সভায় অনুমোদন ও বাস্তবায়ন।

এই দাবিগুলো নিয়ে গত বুধবার বেলা ২টা থেকে কাকরাইল মসজিদের সামনে অবস্থান নিয়েছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। তার আগে তারা যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন অভিমুখে লংমার্চ শুরু করেন। কিন্তু কাকরাইলে পুলিশ বাধা দেয়। ব্যারিকেড ভেঙে এগোতে চাইলে পুলিশ লাঠিচার্জ, কাঁদানে গ্যাস, সাউন্ড গ্রেনেড ও জলকামান ব্যবহার করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে। এতে অন্তত অর্ধশতাধিক শিক্ষক-শিক্ষার্থী আহত হন বলে দাবি আন্দোলনকারীদের।

এই ঘটনার পর আন্দোলন আরও তীব্র হয়। শিক্ষার্থীরা ঘোষণা দিয়েছেন, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা সড়ক ছাড়বেন না। অনেকেই অবস্থানস্থলে রাতে ঘুমিয়েছেন। প্রাক্তন শিক্ষার্থীরাও যোগ দিয়েছেন আন্দোলনে। বৃহস্পতিবার দিনভর শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসে করে আন্দোলনে অংশ নেন।অবরোধের কারণে কাকরাইল ও আশপাশের এলাকায় যান চলাচল একপ্রকার বন্ধ হয়ে যায়। পল্টন, মালিবাগ, শাহবাগ, বাংলামোটর—সব এলাকায় তৈরি হয় তীব্র যানজট। অফিসগামী ও সাধারণ মানুষ চরম ভোগান্তিতে পড়েন। অনেকেই বাস ছেড়ে হেঁটে গন্তব্যে যান।

ট্রাফিক পুলিশের মতে, সকাল ৮টা থেকে ১০টা পর্যন্ত যানজট ছিল সহনীয়। তবে দুপুরের পর পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়। বিকেলে যানজট অসহনীয় পর্যায়ে পৌঁছায়। গাড়িগুলো বিকল্প রুটে ঘুরিয়ে দেওয়া হলেও তাতে সমস্যার সমাধান হয়নি।আন্দোলনের দুই দিনেও সরকারের পক্ষ থেকে কার্যকর কোনো বার্তা আসেনি। যদিও বুধবার রাত ১০টার দিকে অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম ঘটনাস্থলে আসেন। তিনি দাবি সমাধানে বৈঠকের আশ্বাস দিলেও শিক্ষার্থীরা তার বক্তব্যে অসন্তোষ প্রকাশ করেন। বক্তব্য চলাকালে ভিড় থেকে কেউ একজন তার মাথায় পানির বোতল নিক্ষেপ করেন। পুলিশ জানিয়েছে, ওই শিক্ষার্থীকে শনাক্ত করা হয়েছে। তার নাম ইশতিয়াক হোসাইন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের ছাত্র। তাঁকে ধরতে অভিযান চলছে।অধ্যাপক রইছ উদ্দীন বলেন, “দুই দিনেও সরকারের পক্ষ থেকে কেউ কথা বলেনি।

আমাদের দাবির প্রতি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না। দাবি আদায় না হলে আমরা এখান থেকে যাব না। প্রয়োজনে আমৃত্যু অবস্থান করব।”আন্দোলনকারীরা বলছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভবিষ্যৎ নিয়ে তারা শঙ্কিত। তাই যৌক্তিক দাবি আদায়ে তারা শেষ পর্যন্ত লড়বেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *