
পাকিস্তানের বালোচিস্তানে সেনা কনভয়ে জোড়া বিস্ফোরণের ঘটনায় অন্তত ১৪ জন সেনা নিহত হয়েছেন। বুধবার (০৭) দুপুরে বোলান জেলার শোরকান্দ এলাকায় একটি পাহাড়ি রাস্তায় পাক সেনাবাহিনীর গাড়িবহর চলার সময়ই আইইডি বিস্ফোরণ ঘটে। এতে ঘটনাস্থলেই ১২ জন সেনা সদস্য প্রাণ হারান। এরপর আরও একটি বিস্ফোরণ ঘটে কেচ জেলার কুলাগ টিগরান এলাকায়, যেখানে দু’জনের মৃত্যু হয়েছে।
এই হামলার দায় স্বীকার করেছে বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন বালোচ লিবারেশন আর্মি। সংগঠনটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, পাকিস্তানের সেনাবাহিনী তাদের ভূমি দখলের চেষ্টা করছে, আর সেই কারণেই ভবিষ্যতে হামলার পরিমাণ আরও বাড়বে। সংগঠনটি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, তাঁরা ছেড়ে কথা বলবে না।বৃহস্পতিবার (০৮ মে) পৃথক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানায় ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য ওয়াল ও দ্য ডেইলি গার্ডিয়ান।
প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রথম হামলা হয় বোলান জেলার শোরকান্দ এলাকায়। বিএলএ-এর স্পেশাল ট্যাকটিকাল অপারেশন স্কোয়াড (STOS) একটি সামরিক বহর লক্ষ্য করে রিমোট কন্ট্রোল আইইডি বিস্ফোরণ ঘটায়। এতে সামরিক যানটি সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে যায় এবং ১২ জন সেনা নিহত হন। নিহতদের মধ্যে ছিলেন স্পেশাল অপারেশনস কমান্ডার তারিক ইমরান ও সুবেদার ওমর ফারুক।দ্বিতীয় হামলাটি ঘটে কেচ জেলার কুলাগ টিগরান এলাকায়। একটি বোমা নিষ্ক্রিয়করণ দলের ওপর চালানো এই হামলাতেও ব্যবহার করা হয় রিমোট কন্ট্রোল আইইডি। স্থানীয় সময় দুপুর ২টা ৪০ মিনিটে ওই দলটি এলাকায় ক্লিয়ারেন্স অপারেশন চালাচ্ছিল। বিস্ফোরণে ঘটনাস্থলেই দুই সেনা নিহত হন।
এর আগে, কয়েক সপ্তাহ আগে বালোচ বাহিনী বালোচিস্তানের কোয়েটা থেকে খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের পেশোয়ারগামী একটি ট্রেন হাইজ্যাক করেছিল। ঐ ট্রেনে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী, আইএসআই ও নিরাপত্তা সংস্থার বহু সদস্য ছিলেন। বিদ্রোহীদের দাবি ছিল, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্তি দিতে হবে, না হলে পণবন্দিদের হত্যা করা হবে। যদিও সময়সীমার আগেই তাদের উদ্ধার করা হয়, তবে বালোচদের দাবি, অন্তত ৫০ জন পাক সেনাকে তারা হত্যা করেছে।এই পরিস্থিতিতে পাকিস্তানের ভেতরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও নড়বড়ে হয়ে পড়েছে।এদিকে, ভারতের প্রত্যাঘাতের পরদিনই বৃহস্পতিবার সকালে পাকিস্তানের লাহোর শহরের ওয়ালটন বিমানবন্দর সংলগ্ন গোপালনগর ও নাসিরাবাদ এলাকায় একাধিক বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ৫-৬ ফুট আকারের একটি ড্রোন ব্যবহার করে এই বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। যদিও পাকিস্তানি সেনাবাহিনী দাবি করেছে, সেই ড্রোন গুলি করে নামানো হয়েছে। তবে এই বিস্ফোরণের প্রকৃত কারণ সম্পর্কে এখনো কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য মেলেনি।