
সাগর উত্তাল থাকায় দুর্ঘটনা এড়াতে কক্সবাজারের টেকনাফ-সেন্টমার্টিন রুটে সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। এছাড়া সকাল থেকে দ্বীপে ঝড়ো হাওয়া শুরু হয়েছে। এতে দ্বীপে মাছ ধরা নৌযানগুলো টেকনাফে নিরাপদে নিয়ে এসেছে ট্রলার মালিকরা। এ বিষয়ে টেকনাফ-সের্ন্টমাটিন রুটের সার্ভিস বোটের সভাপতি রশিদ আহমদ বলেন, ‘বৈরী আবহাওয়ার কারণে দুর্ঘটনা এড়াতে গত তিন ধরে এ রুটে নৌযান চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে দ্বীপে নিত্য-প্রয়োজনীয় মালামাল সংকট দেখা দিয়েছে। এছাড়া দ্বীপে আগে থেকে লোকজন কর্মহীন হয়ে পড়ায় দুর্দিন যাচ্ছিল। তার ওপর বৈরী আবহাওয়ার কারণে দ্বীপবাসী আরও কষ্টের মধ্যে পড়েছে।’তিনি বলেন, ‘দ্বীপে সকাল থেকে ঝড়ো হাওয়ার সঙ্গে বৃষ্টি শুরু হয়েছে। এতে আমরা মাছ ধরার ট্রলারগুলো টেকনাফে নিরাপদে নিয়ে এসেছি। এভাবে চলতে থাকলে দ্বীপের অবস্থা খুবই করুণ হবে।
সেন্টমার্টিনের বাসিন্দা আইয়াত উল্লাহ বলেন, সেন্টমার্টিনবাসী আগে থেকে সংকটের মধ্যে ছিল। তার ওপর বৈরী আবহাওয়ার কারণে তিনদিন ধরে বন্ধ রয়েছে নৌযান চলাচল। এতে মানুষ ঘরবন্দি হয়ে আছে। বাজারে নিত্য-প্রয়োজনীয় সব মালামাল শেষের পথে। যদি খাদ্যপণ্য ট্রলার না আসে, দ্বীপের মানুষদের না খেয়ে থাকতে হবে।’ এদিকে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপের কারণে উত্তাল রয়েছে সাগর। এতে পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পেয়েছে। লঘুচাপের প্রভাবে কক্সবাজারের বিভিন্ন উপকূলীয় এলাকায় বৃষ্টি ও ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।
বুধবার সকাল থেকে উপকূলের বিভিন্ন এলাকায় ঝোড়ো হাওয়া ও বৃষ্টি শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এই পরিস্থিতিতে কক্সবাজারসহ দেশের চার সমুদ্রবন্দরে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্কতা সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। অন্যদিকে পানির উচ্চতা বৃদ্ধির কারণে টেকনাফ সীমান্তের শাহপরীর দ্বীপ জালিয়াপাড়া নাফ নদীর তীরে জোয়ারে আঘাতে ভাঙছে বেড়ি বাঁধ। এতে সেখানে থাকা বসবাসকারীরা আতঙ্করে মধ্য রয়েছে।শাহপরীর দ্বীপের জালিয়া পাড়ার বাসিন্দা মোহাম্মদ আলম বলেন, ‘সকাল থেকে ঝড়ো হাওয়া শুরু হয়েছে। এছাড়া নাফ নদীর পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পাওয়ায় ঢেউয়ের আঘাতে তীরে ভেঙে যাচ্ছে বেড়ি বাঁধ। এতে সেখানে থাকা অর্ধশতাধিক মানুষ ঝুঁকির মধ্য রয়েছে।’
এ ব্যাপারে সেন্টমার্টিন ইউপি (ভারপ্রাপ্ত) চেয়ারম্যান ফয়েজুল ইসলাম বলেন, ‘গত তিন ধরে টেকনাফ-সেন্টমার্টিনে নৌযান চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে দ্বীপের মানুষের নিত্য-প্রয়োজনী পণ্যের সংকট দেখা দিয়েছে। এছাড়া দ্বীপের মানুষের খুব খারাপ সময় যাচ্ছে। তার ওপর সকাল থেকে ঝড়ো বাতাস শুরু হয়েছে। এতে সাগরের পানির উচ্চতা বেড়েছে।’ টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহসান উদ্দিন বলেন, ‘বৈরী আবহাওয়ার কারণে টেকনাফ ও সেন্টমার্টিন থেকে সব ধরনের যাত্রীবাহী ট্রলার ও নৌযান চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে আগে থেকে দ্বীপে জেলেসহ প্রায় আড়াই হাজার মানুষের জন্য সহতায় পাঠানো হয়েছে। এরপরও আমরা নিয়মিত খোঁজ রাখছি। বৈরী আবহাওয়া স্বাভাবিক হলে নৌযান চলাচল শুরু হবে। এছাড়া শাহপরীর দ্বীপে নাফের পাড়ে ভাঙনের বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের জানানো হয়েছে