
আজ ২৭ মে,মঙ্গলবার চট্টগ্রামে দ্বিতীয় দফায় কুকি চিনের ১১ হাজার ইউনিফর্ম উদ্ধারচট্টগ্রামে করা হয়েছে। এর আগে আরও ২০হাজার ইউনিফর্ম উদ্ধার করা হয়েছিল। দুই দফায় কুকি চীনের ৩১হাজার ইউনিফর্ম তৈরি করার সময় উদ্ধার হলো। এতো বিশাল পরিমাণ ইউনিফর্ম কুকি চীনের সদস্য বৃদ্ধির ইঙ্গিত দিচ্ছে।যা দেশের সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকিস্বরূপ।
শনিবার (১৭ মে) রাতে নগরীর বায়েজিদ বোস্তামি এলাকার রিংভো অ্যাপারেলস নামে একটি পোশাক কারখানা থেকে এসব ইউনিফর্ম জব্দ করা হয়। অভিযানকালে কারখানার মালিকসহ তিন জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে । তবে পোশাক জব্দ ও গ্রেপ্তারের ৭ দিন পর ঘটনাটি জানাজানি হয়েছে গত রোববার।গ্রেপ্তাররা হলেন সাহেদুল ইসলাম, গোলাম আজম ও নিয়াজ হায়দার। এদের মধ্যে সাহেদুল ইসলাম ওই কারখানার মালিক। অন্যরা এসব ইউনিফর্ম তৈরির কার্যাদেশ এনেছিলেন।বায়েজিদ থানা পুলিশ জানায়, এ ঘটনায় গত ১৮ মে চার জনকে আসামি করে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। নগর গোয়েন্দা পুলিশের এসআই ইকবাল হোসেন বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেন । মামলায় গ্রেপ্তার তিন জন ছাড়াও রাঙ্গামাটির কাপ্তাইয়ের মংহ্লাসিং মারমা (৩৭) নামের এক ব্যক্তিকে আসামি করা হয়।মামলায় উল্লেখ করা হয়, গত মার্চ মাসে ইউনিফর্মগুলো তৈরির কাজ দিয়েছিলেন গোলাম আজম ও নিয়াজ হায়দার। তারা মংহ্লাসিং মারমা প্রকাশ মং নামের একজনের কাছ থেকে ২ কোটি টাকা চুক্তিতে ইউনিফর্ম তৈরির কাজ নেন। মংহ্লাসিংকে কেএনএফ সদস্যরা তাদের কাপড়ও দিয়ে যায় । চলতি মাসে এসব কাপড় সরবরাহের কথা ছিল।কুকি-চিন নিশ্চিহ্ন না হওয়া পর্যন্ত অভিযান চলবেকুকি-চিন নিশ্চিহ্ন না হওয়া পর্যন্ত অভিযান চলবেতবে এ বিষয়ে পুলিশ আনুষ্ঠানিকভাবে বক্তব্য দেয়নি। এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ কমিশনার হাসিব আজিজ, বায়েজিদ থানার ওসি এবং গোয়েন্দা পুলিশের একাধিক কর্মকর্তাকে ফোন দিলেও তারা ধরেননি।মামলার এজাহার এবং জব্দ তালিকার অনুলিপি থেকে জানা গেছে, গোয়েন্দা পুলিশ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে নগরীর বায়েজিদ এলাকা থেকে সায়েদুল ইসলাম এবং হালিশহর ছোটপুল এলাকা থেকে গোলাম আজম ও নিয়াজ হায়দারকে গ্রেপ্তার করে। ‘‘তাদের দেওয়া তথ্য মতে বায়েজিদ থানাধীন মোজাফফর নগর এলাকায় অবস্থিত রিংভো অ্যাপারেলসের গোডাউন থেকে ৩২০ বস্তা এবং নয়ারহাট এলাকায় কারখানা থেকে ২৬০ বস্তা মিলিয়ে মোট ২০ হাজার ৩০০টি পোশাক জব্দ করা হয়।‘‘মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, দুই কোটি টাকা দিয়ে মংহলাসিন মারমা এবং কুকি-চীনের সদস্যদের কাছ থেকে গত মার্চ মাসে এসব পোশাক তৈরির অর্ডার নেওয়া হয়।রিংভো অ্যাপারেলসের প্রডাকশন ম্যানেজার মো. কামরুজ্জামানকে এসব পোশাক জব্দের সাক্ষী রাখা হয়েছে।প্রডাকশন ম্যানেজার মো. কামরুজ্জামান গণমাধ্যমকে বলেন, ‘এসব পোশাক তৈরির বিষয়ে আমরা জানি না। আমরা সাব-কন্ট্রাক্টের কাজ করে থাকি। আমরা কোনো বড় প্রতিষ্ঠান না। একটি ফ্লোরে ৫০-৬০টি মেশিন নিয়ে কারখানাটি চালানো হয়। এসব পোশাক কাদের, তাও আমরা জানি না।’প্রসঙ্গত বান্দরবানের রুমা উপজেলায় কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট নামে এই সশস্ত্র সংগঠনের অস্তিত্ব সামনে আসে ২০২২ সালের শুরুর দিকে। বম, পাংখোয়া, লুসাই, খিয়াং, খুমি ও ম্রোদের নিয়ে এ সংগঠন গঠন করার কথা বলা হলেও সেখানে বম জনগোষ্ঠীর কিছু লোক রয়েছে। সে কারণে সংগঠনটি পাহাড়ে ‘বম পার্টি’ নামে পরিচিতি পায়।