
জলাবদ্ধতা চট্টগ্রাম নগরীর দীর্ঘদিনের সমস্যা। অনেকবছর যাবৎ জলাবদ্ধতা নিরসণে বেশ কয়েকটি প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়েছে এবং কিছু প্রকল্প চলমান৷ যেসব এলাকার প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়েছে সেখানে অনেক বছর যাবৎই জলাবদ্ধতা নেই। যেমন নগরীর প্রবর্তক মোড় এবং অক্সিজেন মোড় এলাকা ছিলো সবচেয়ে বেশি জলাবদ্ধপ্রবণ এলাকা। সামান্য বৃষ্টি হলেই সেখানে পানি উঠে যেতো হাটুসমান। কিন্তু জলাবদ্ধতা নিরসণের জন্য প্রকল্প বাস্তবায়ন শেষে এই এলাকাগুলোর জলাবদ্ধতা শূণ্যে নেমে আসে। এসব প্রকল্প একে একে ধারাবাহিকভাবে চলমান আছে। যার ফলে ধীরে ধীরে বিভিন্ন এলাকার জলাবদ্ধতা নিরসণ হচ্ছে।
তবে গতকাল ৩০মে উপদেষ্টা ফারুক-ই-আযম নগরীর জলাবদ্ধতা প্রকল্প দেখতে এসে, কয়েকটি এলাকা প্রদর্শন করে কোনো জলাবদ্ধতা না দেখে পুরো চট্টগ্রাম শহরে কোনো জলাবদ্ধতা নেই বলে মন্তব্য করেন। এরই প্রেক্ষিতে বেশিরভাগ সংবাদ মাধ্যম খবর প্রচার করেন যে,ইউনূস সরকারের ম্যাজিকে জলাবদ্ধতা কমে গিয়েছে।
উপদেষ্টা রহমতগঞ্জ, জেএমসেন লেন, জিইসি মোড়, মুরাদপুর ও বহদ্দারহাটসহ জলাবদ্ধতা প্রবণ বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেন এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।এসময় তিনি বলেন, টানা বৃষ্টির পরও নগরে জলাবদ্ধতা না হওয়া একটি বড় সাফল্য। এর পেছনে চসিকসহ সংশ্লিষ্ট সেবা সংস্থাগুলোর সমন্বিত প্রচেষ্টা রয়েছে। পরিকল্পিতভাবে কাজ চালিয়ে গেলে ভবিষ্যতেও নগরবাসী জলাবদ্ধতা থেকে মুক্ত থাকতে পারবে। চলমান কার্যক্রমের ধারাবাহিকতা ধরে রেখে বাকি কাজগুলো দ্রুত সম্পন্ন করতে হবে।
জলাবদ্ধতা নেই বললেও বাস্তবে চট্টগ্রাম নগরীতে বিগত ২৮মে রাতেও বৃষ্টিতে নগরীর বেশিরভাগ এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। কিন্তু তারপর ২৯-৩০মে বৃষ্টি হলেও জলাবদ্ধতা তেমন হয়নি। একদিনে কি ইউনূস ম্যাজিকেই জলাবদ্ধতা নিরসণ হয়ে গিয়েছে?

মূলত চট্টগ্রাম নগরীতে বেশিরভাগ জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয় হঠাৎ অল্প সময়ের মধ্যে অধিকমাত্রায় বৃষ্টি হলে। থেমে থেমে মূষলধারে বৃষ্টি হলে নগরীতে খুব কমই জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। বৃহঃস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে শুক্রবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রামে ১৬৭ দশমিক ১ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। যা পুরো চট্টগ্রামের হিসেব। চট্টগ্রাম নগরীতে এসময় বৃষ্টি আরও কম হয়েছে। ধাপে ধাপে হালকা বৃষ্টি হওয়ার কারণেই জলাবদ্ধতা তেমন সৃষ্টি হয়নি। তবে এই অল্প পরিমাণ বৃষ্টিতেও নগরীর আগ্রাবাদ,হালিশহর,কাস্টমস,বহাদ্দারহাট এলাকার অনেক জায়গায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়।
কিন্তু উপদেষ্টার শুধু কয়েকটি এলাকার প্রধান সড়ক প্রদর্শীন করে জলাবদ্ধতা নিরসণের খবর ছড়িয়ে পড়ায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে চট্টগ্রামের সাধারণ মানুষ। জলাবদ্ধতা নিরসণে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার আহবান জানিয়েছে তারা।