
মুক্তিযুদ্ধের বীর এবং সাবেক সেনাপ্রধান এম হারুন-অর-রশীদ আর নেই (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। সোমবার দুপুরে চট্টগ্রাম ক্লাবের একটি গেস্টহাউস থেকে তাঁর মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
মৃত্যুর কারণ প্রাথমিকভাবে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়া বলা হলেও, তাঁর শরীরে কিছু আঘাতের চিহ্ন দেখতে পাওয়ায় পরিবার ও স্বজনদের মধ্যে রহস্য এবং ক্ষোভ তৈরি হয়েছে।
তবে মৃত্যুর পর আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে একটি বিষাদময় সিদ্ধান্ত—রাষ্ট্রীয় সম্মাননা গ্রহণ না করার অনুরোধ।জীবিত অবস্থাতেই এই মুক্তিযোদ্ধা নিজের পরিবার ও ঘনিষ্ঠজনদের জানিয়ে গিয়েছিলেন, মৃত্যুর পর যেন তাঁকে রাষ্ট্রীয় গার্ড অব অনার না দেওয়া হয়।
তাঁর নিজের কথায়—> “যে পাক হানাদারদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করলাম, আজ রাষ্ট্রক্ষমতায় বসে তাদের উত্তরসূরিরা আমার মতো মুক্তিযোদ্ধাকে রাষ্ট্রীয় সম্মাননা দেবে—এটা আমার জন্য লজ্জার।”
এই বক্তব্যের মাধ্যমে তিনি যে ব্যথা ও নৈতিক প্রতিবাদের ইঙ্গিত দিয়ে গেছেন, তা নাড়িয়ে দিয়েছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী অসংখ্য মানুষকে।পরে রাতেই চট্টগ্রামের হাটহাজারীর নিজ গ্রামে রাষ্ট্রীয় সম্মান ব্যতিরেকে পারিবারিক পরিবেশে তাঁর জানাজা ও দাফন সম্পন্ন হয়।
প্রসঙ্গত, এম হারুন-অর-রশীদ ১৯৪৮ সালে জন্মগ্রহণ করেন। মহান মুক্তিযুদ্ধে তিনি অসামান্য সাহসিকতার জন্য ‘বীর প্রতীক’ খেতাবে ভূষিত হন। দেশপ্রেম, সাহস ও ন্যায়ের পথে অবিচল থাকা এই মুক্তিযোদ্ধার জীবনের শেষ অধ্যায়ও যেন হয়ে থাকল এক নীরব, অথচ দৃপ্ত প্রতিবাদের ভাষ্য।